March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ব্যক্তিরা এই দাবি জানান।

একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। এরপর টানা নয় মাস ধরে চলতে থাকে হত্যাযজ্ঞ। বিশ্ববাসী ও দেশের মানুষের কাছে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বর্বর হত্যাকাণ্ডের কথা জোরেশোরে তুলে ধরতে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
জাহানারা ইমাম নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি মারা যান। তাঁর নেতৃত্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার ও ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশের সব জায়গা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে না পারলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি বা দেশের উন্নয়ন নিয়ে সরকারের আত্মতুষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অনুষ্ঠানে জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা ও জাহানারা ইমাম পদক প্রদান করা হয়। এবার পদক পান সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়।
‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন (১৯৬১-৭১)’ শীর্ষক স্মারক বক্তব্য দেন ছায়ানটের সভাপতি সনজিদা খাতুন। তিনি তাঁর বক্তব্যে পাকিস্তান আমলে সাংস্কৃতিক আন্দোলন কীভাবে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে তা তুলে ধরেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন সব সময় গণ-আন্দোলনকে শক্তি জুগিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার ২৫ মার্চ থেকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের পদক্ষেপ নেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, যদি মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ থেকে যায় তাহলে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করে কী লাভ? গত ৩০ বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত তাদের আদর্শের বীজ বুনে গেছে। কিন্তু সরকার বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এর বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রচারে সেভাবে কাজ করতে পারেনি। জামায়াতের মুখোশ উন্মোচনে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোনো নেতা কাজ করেননি বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মামুন।
অজয় রায় বলেন, জাহানারা ইমাম না জন্মালে, আন্দোলন শুরু না করলে যুদ্ধাপরাধীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যেত।
জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ আয়োজন করে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email