March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

টানা বৃষ্টিতে নগরজুড়ে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ টানা দুদিনের বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসী। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় নগরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত এসব পানি মাড়িয়েই চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে পুরো নগরে দেখা দিয়েছে অসহনীয় যানজট। সবমিলিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে নগরবাসী।

ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকায় অনেকেই এ সময়ে ঈদ কেনাকাটা করে নেওয়ার চিন্তা করছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সে চিন্তাও ভেস্তে গেছে। টানাবৃষ্টি ও যানজটের কারণে সিএনজি, অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব ও রিকশাচালকরা হাঁকিয়ে বসছে অতিরিক্ত ভাড়া।  রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে নগর পরিবহনের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেককেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে সার্জেন্ট ও ট্রাফিক কনস্টেবলরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। এ সুযোগে গণপরিবহনের চালকরা খুশিমতো গাড়ি চালিয়ে কে কার আগে যেতে পারে এ প্রতিযোগিতায় নামে।”

তিনি আরো বলেন, “এছাড়া অসংখ্য ভাঙাচোরা রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমায় সেগুলো দ্রুতগতিতে যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। তাই দুপুরের আগেই ঢাকার অধিকাংশ ব্যস্ততম সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, যা সারাদিনেও আর সামাল দেয়া যায়নি।”

তিনি বলেন, “ঈদের আগে বরাবরের মতো এবারো রাজধানীর উপকণ্ঠ শহরগুলো থেকে হাজার হাজার রিকশা ঢাকায় ঢুকে পড়েছে। একারণে নগরীর যানজট ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।”

বৃহস্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার সকালে রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার, মতিঝিল, রামপুরা, বাড্ডার প্রগতি সরণি, গুলশান, বনানী, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি ও ঝিগাতলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দেখা গেছে, ভয়ংকর যানজটে হাজার হাজার বাস-মিনিবাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, রিকশা ও ট্যাক্সিক্যাব আটকে পড়েছে।

যান্ত্রিক যানবাহনও চলছে অযান্ত্রিক যানের গতিতে।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত হাতিরঝিলেও ভয়ংকর যানজট সৃষ্টি হয়। সেখানকার দেড় দু’কিলোমিটার রাস্তা পার হতে লেগেছে দুই ঘণ্টারও বেশি সময়। বিশেষ করে গুলশানের লিংকরোডে ঢুকতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া হাতিরঝিল থেকে মধুবাগ ও মহানগর প্রোজেক্টে ঢোকার পথেও ছিল দিনভর প্রচণ্ড যানজট।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীকে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সড়কগুলো ঠিকমতো সংস্কার করা হয় না বলে কেউ কেউ অভিযোগ করে। পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কারণে সড়কসহ সবখানে পানি জমে থাকে। এসব পানি মাড়িয়ে বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের মধ্যে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসন করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। মাত্র তো দায়িত্ব পেয়েছে। কয়েকটা দিন সময় দিন। যানজট ও জলাবদ্ধতা মুক্ত রাজধানী আপনারা দেখতে পাবেন।”

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এ বৃষ্টি আরও দু’একদিন থাকতে পারে। তবে পরের দিনগুলোতে বৃষ্টির প্রকোপ কমে আসবে। সে অনুযায়ী নগরবাসীকে এ কষ্ট আরও কয়টা দিন সহ্য করতেই হবে।

Print Friendly, PDF & Email