March 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

এবার হালাল নেইল পলিশ!

বাংলাদেশে হালাল সাবানের চল অনেক পুরনো বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে এবার যে ‘হালাল’ পণ্যটি বিশ্বজুড়ে চমক আনতে যাচ্ছে তা হচ্ছে হালাল নেইল পলিশ। বিশ্বের অনেক নামীদামি কোম্পানি তাদের উৎপন্ন বিশেষ ধরনের নখ পালিশকে ইসলামি তরিকা মোতাবেক হালাল বলে দাবি করছে।

প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, মুসলিম নারীরা এখন থেকে এই নেইল পলিশ ব্যবহার করে নামাজসহ অন্যান্য ধর্মীয় আচারাদি পালন করতে পারবে। কারণ, ওযুর সময়ে এই নেইল পলিশ পানি বা বাতাসকে নখের স্পর্শে যেতে বাধা দেয় না।

এই দাবিকে সামনে রেখে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশ আরব আমিরাতের দুবাই শহরের নারীদের অনেক সেলুনে এখন এটা ব্যবহার করা হচ্ছে, চলছে এর পক্ষে প্রচারণা। প্রচারে-বিজ্ঞাপনে ‘হালাল’ কথাটি গুরুত্বের সঙ্গে থাকছে। এরই মধ্যে ‘হালাল নখ পালিশের’ ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে জানান সেলুনওয়ালারা।

তবে বিষয়টির পক্ষে এখনি সিদ্ধান্ত নিতে নিরুৎসাহিত করেছেন দুবাইর ইসলামিক অ্যাফেয়ার অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাকটিভিটিস বিভাগের গ্রান্ড মুফতি ড. আলী আহমেদ মাশায়েল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়েদের এক্ষেত্রে খুবই সচেতন হতে হবে এবং এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ফতোয়া (রায়) আসার আগে ওইসব কোম্পানি আর সেলুনের কথা বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, যদি দাবি করা হয়ে থাকে যে এই নেইল পলিশগুলো নখের ওপর জল-হাওয়া রোধক কোনো আবরণ তৈরি করে না সেক্ষেত্রে সেটা উপড়ে তুলে ফেলা যায় কি না সেটা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। যদি দেখা যায় এটা আবরণ আকারে উঠে আসছে না, তবে বলতে হবে, হ্যাঁ, এটা হালাল। কিন্তু যদি দেখা যায় যে এটা উঠে আসছে, তবে এটা হালাল না। সেক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করে নামাজ হবে না।

গ্রান্ড মুফতি এ প্রসঙ্গে মেহেদীর তুলনা দেন। নখে-হাতে-পায়ে-মাথায় মেহেদী ব্যবহার করেও নামাজ পড়া যায়। কারণ, এর রঙ কোনো আবরণ তৈরি করে না এবং এটা খোসার মতো উঠেও আসে না।

তবে দেশটির নারীদের মাঝে এই ‘হালাল’ রূপসজ্জা উপকরণটি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছে। অবশ্য মারিয়াম আহমেদ নামের এক নারীর মতে এটা হালাল। এর পক্ষে বলতে গিয়ে তিনি জানান, নখে ওই নেইল পলিশ ব্যবহার করেছিলেন তিনি। গত ঈদে মেহেদী ব্যবহারকালে ‘হালাল নেইল পলিশ’ লাগানো একটি নখে ভুলে এক ফোঁটা মেহেদী পড়ে যায়। পরে তিনি যখন সেই নেইল পলিশ তুলে ফেলতে যান, তখন দেখেন নেইল পলিশ উঠে গেছে কিন্তু মেহদীর দাগ লেগে আছে নখে। আর তাই, তিনি মনে করছেন, এটা সত্যিই হালাল নেইল পলিশ। কারণ, অন্যান্য নেইল পলিশের ওপরে মেহেদী লাগালে তা পলিশের আবরণ ভেদ করে নখে লাগতে পারে না।

২০১৪ সালের রমজানে (জুন মাসে) এই পণ্যটি সীমিত আকারে মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে পাওয়া যেতে থাকে। তবে এখন তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে কোম্পানিগুলো।

Print Friendly, PDF & Email