March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

সিম নিবন্ধনে জরিমানার বিধান হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম কার্ডের নিবন্ধনে ভোগান্তি ও হয়রানি রোধে প্রয়োজনে ‘অতিরিক্ত নির্দেশনা’ দিয়ে জরিমানার বিধান রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাগে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম কার্ড পুনঃনিবন্ধনের ক্ষেত্রে নতুন করে কর আরোপ করা হবে না।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে টেলিকম খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশর (টিআরএনবি) ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
ওই অনুষ্ঠানে তিনি আরো জানান, মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকা কিস্তিতে কৃষক ও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জন্য স্বল্পমূল্যে ও সহজ কিস্তিতে স্মার্টফোন দেওয়া হবে।
সিম নিবন্ধন বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘আমি যদি দেখি, মোবাইল টিম গঠনের পরও অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না, তাহলে প্রয়োজন হলে আমি অতিরিক্ত নির্দেশনা দেব, যেন বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের জরিমানার বিধানটি রাখে। আমাদের একটা সংস্কৃতি আছে- মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তখনই শুধু ভাষাটা বোঝে, সে ভাষা বোঝাবার জন্য প্রয়োজন সেটিও আমরা করব।’
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, গ্রাহক হয়রানি রোধে ইতিমধ্যে বিটিআরসি তিনটি মোবাইল টিম গঠন করেছে।
এই টিম বিভাগীয় পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলায় কাজ করবে, উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিবন্ধনে যদি জরিমানার বিধান থাকে তাহলে বিটিআরসি জরিমানা করবে।
নতুন কর আরোপ না করার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আমি বলেছি রি-রেজিস্ট্রেশন ও রিপ্লেসমেন্টের মধ্যে পার্থক্য আছে। দুটোর মধ্যে তারা কনফিউজড ছিলেন। আমি দুটো বিষয় ব্যাখ্যা করেছি। কারণ, সিম কেনার ক্ষেত্রে একবার কর দিয়েছেন, দ্বৈত করের আর প্রয়োজন নেই।’
তিনি জানান, বৈঠকে অর্থমন্ত্রী, এনবিআর চেয়ারম্যান, আইনজীবী ছিলেন। অর্থমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে নতুন করে কর আরোপ করা হবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিটিআরসি থেকে চিঠি পাঠাচ্ছি, অপারেটররা লিখিতভাবে চিঠি পেলে আশ্বস্ত হবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় লিখিত দিলে আমরা অপারেটরদের পাঠিয়ে দেব।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ নিয়ে কোনো মামলা-মোকদ্দমায় পড়তে চাই না। এটা নিয়ে বিতর্ক, সংশয়ের কোনো অবকাশ নাই। এটা মনে হয় অপারেটরদের ধীরে চলার কারণ। এটা নিয়ে ভীতির কোনো কারণ নেই।’
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে বায়োমেট্রিক তথা আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু হয়। আগামী এপ্রিলের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করার কথা।
সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক অবস্থায় সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া ছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন একটা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে চাচ্ছি।’
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বল্পমূল্যে হ্যান্ডসেট দেওয়ার প্রসঙ্গে তারানা হালিম বলেন, ‘টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এরিকসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে মোবাইল চিপ উৎপাদনের কথা জানিয়েছে। এর ফলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং হ্যান্ডসেটের দাম কমে আসবে।’
কম দামে সহজ কিস্তিতে মোবাইল হ্যান্ডসেট সরবরাহে মোবাইল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ওয়ালটনের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য কিছু অ্যাপস কমিয়ে দিয়ে তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে ওয়ালটন। তারা ২৫ থেকে ৩০ টাকার কিস্তিতে স্মার্টফোন দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে। আমি কৃষকের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে চাই।’
তৃণমূল পর্যায়ে সবার হাতে স্মার্টফোন দিতে উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেড় থেকে দুই হাজার টাকার স্মার্টফোন কৃষক-মজুর থেকে শুরু করে সবার হাতে পৌঁছে দিতে চাই।
অনুষ্ঠানে টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদসহ সংগঠনের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email