March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

বিএনপির কাউন্সিলে এখনো আমন্ত্রণ পাইনি : আশরাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিএনপির সম্মেলনে এখনো পর্যন্ত আমন্ত্রণ পাইনি’ বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শনিবার দুপুরে তিনি এ কথা জানান।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি ‘সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করা, সরকারকে ডিফেন্ড করা, মনে হয় যেন এক ঢিলে দুই শত্রু মারার চেষ্টা করেন। এভাবেই কিন্তু বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা। আমাদের আরও বড় পরিসরে এখানে সংগঠন থাকতে হবে। কিছু কিছু বিষয়ে মত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এখানে কাউকে ছোট করা, কাউকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করা, সেটা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় অন্তরায় হয়ে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সতর্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যেকোনো প্রকার (এনি কাইন্ড অব) সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক না, এটা সঠিক না। আজকে তার (প্রধানমন্ত্রী) নেতৃত্বের জন্যই রাষ্ট্র-ক্ষমতা আওয়ামী লীগের হাতে। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসের ব্যাপ্তির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সরকার ক্রমাগত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসীদের জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, বুদ্ধিজীবী এবং সমাজের বিভিন্ন অংশ শেখ হাসিনার সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে সরকার বা শেখ হাসিনা সম্পর্কে ডাউট (সন্দেহ) করা সঠিক হবে না বলে মনে করি। আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সন্ত্রাস তো শুধু আমাদের দেশে না। প্রত্যেকটা দেশে সন্ত্রাস আছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে মধ্যপ্রাচ্যে এই অবস্থা কেন? এটার মূল উদ্যোক্তা সৌদি আরব। আজকে যে ইরাকের এবং সিরিয়ার অবস্থার মূল বিষয়টা হলো কে লিডারশিপ দেবে। এটার মূল উদ্যোগটা হলো সৌদি আরব। সৌদি আরব যদি সুন্নিদের পেট্রোনাইজ না করত, তাহলে কিন্তু ইরাকে যুদ্ধ হয় না, সিরিয়াতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় না। এইগুলো তাদের সঙ্কীর্ণ ধর্মীয় গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের জন্য সারা বিশ্বে আজকে আতঙ্কিত। কেউ আজকে কিন্তু নিরাপদ নাই। আমরা যে সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করছি, সারা বিশ্বকে আজ সেই সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করতে হবে। সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে দমন করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ইরাকে যুদ্ধ চলছে, ইয়েমেনে যুদ্ধ চলছে। এটা আস্তে আস্তে বিস্তৃত হচ্ছে। আজকের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। বাংলাদেশে শুধু ধর্মের নামের সাম্প্রদায়িকতা তারাই না, তাদের পৃষ্ঠপোষক আছে। তারা চায় বাংলাদেশে একটা শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষ হোক বা মুসলমান-হিন্দুর সঙ্গে একটা বিভাজন হোক। এটা আমাদের সরকার কোনোভাবে অ্যালাউ করতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ডিটারমাইন্ড।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনা করি, কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে পদক্ষেপ নেওয়া। যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, শেখ হাসিনা পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আরও পদক্ষেপ নেবেন। আমরা চাই আপনারা আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হোন, সমগ্র অসাম্প্রদায়িক শক্তি আমাদের সঙ্গে যোগ হোক। শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করুক। আমরা এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জয় লাভ করবই।’

প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ- প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিএমএ’র মহাসচিব ডা. ইকবাল আর্সেনাল, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম, শাহরিয়ার কবির, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email