March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

‘ব্যাগ ট্রলিতে করে টাকা নিয়ে যাওয়া হয় জুয়ার হোটেলে’

ডেস্ক  প্রতিবেদন : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির একটি অংশ ব্যাগ ভর্তি করে ট্রলিতে করে জুয়ার হোটেলে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মার্ক পালমেয়ার্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে ফিলিপাইনের সিনেট ব্লু রিবন কমিটির শুনানিতে মঙ্গলবার উপস্থিত হয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন পালমেয়ার্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার সময় রেমিট্যান্স সেবাদানকারী কোম্পানি ‘ফিলরেম সার্ভিস করপোরেশন’-এর বার্তাবাহক হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ফিলরেম সার্ভিস করপোরেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা ডলার থেকে ফিলিপাইনের মুদ্রা পোসোতে রূপান্তর করা হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরির হওয়া ১০১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনে পাচার হয়ে যায়। ঘটনা তদন্তে শুনানি করছে দেশটির সিনেট ব্লু রিবন কমিটি।

পালমেয়ার্স শুনানিতে বলেন, ‘৯০ মিলিয়ন পেসো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা) এবং অপর ৫ লাখ ডলার (৪ কোটি টাকা) সুটকেস, ট্রাভেলিং ব্যাগ এবং কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে ঢুকানো হয়। টাকাভর্তি সে ব্যাগগুলো একটি ট্রলির মাধ্যমে জুয়ার (ক্যাসিনো) হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।’

প্রথমবারের মতো শুনানিতে উপস্থিত হয়ে পালমেয়ার্স বলেন, তিনি তার বস (ফিলরেম করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট) সালুয়াদ বাউতিস্তার নির্দেশে ৫ ফেব্রুয়ারি পারাঙ্কু সিটিতে অবস্থিত সোলাইর রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মাকাতি সিটির সিটিল্যান্ডে অবস্থিত তাদের অফিস (ফিলরেম সার্ভিস করপোরেশন) থেকে অর্থ নিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অর্থ সোলাইর রিসোর্টে পৌঁছে দিয়েছেন। সে স্বয়ং এ অর্থ পৌঁছে দিয়েছে বলে শুনানিতে জানায়।

সিনেট কমিটির সভাপতি সিনেটর তোফিয়েস্তো গুয়ানগুনা এ সময়ে প্রশ্ন করেন, ‘৯০ মিলিয়ন পেসোর ওজন কত এবং কোন ব্যক্তির পক্ষে এটা বহন করা সম্ভব কি না?’ এর উত্তরে পালমেয়ার্স বলেন, ‘ব্যাগভর্তি টাকাগুলো ট্রলিতে রাখা হয়। গাড়ি থেকে টাকাগুলো নামিয়ে ট্রলিতে স্থানান্তর করা হয়।’

‘টাকা বহনে কয়টা ব্যাগ ব্যবহার করতে হয়েছে’- জানতে চাইলে পালমেয়ার্স তদন্ত কমিটিকে বলেন, ‘বড় একটা ব্যাগ এবং একটা সুটকেস লেগেছে। আবার সুটকেসের পাশ ছিল অনেক বড়।’

ফের এ বিষয়ে সিনেটর প্রধান প্রশ্ন করলে পালমেয়ার্স বলেন, ‘একটা সুটকেস, একটা দীর্ঘ ট্রাভেলিং ব্যাগ এবং একটা কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ -মোট তিনটি ব্যাগ ব্যাবহার করতে হয়েছে। ব্যাগগুলোর মধ্যে ৯০ মিলিয়ন পেসো এবং ৫ লাখ ডলারের নগদ অর্থ ছিল।’

‘তুমি কীভাবে এগুলো একা বহন করেছো’ সিনেট সভাপতির এমন প্রশ্নের জবাবে পালমেয়ার্স বলেন, ‘তার চাচা (আংকেল) এবং ফিলরেম কোম্পানির ড্রাইভার রোনিলো পালমেয়ার্স টাকার ব্যাগগুলো গাড়ি থেকে নামাতে সাহায্য করেছে।’

তবে তিনি একাই টাকাভর্তি ব্যাগগুলো ট্রলির মাধ্যমে সোলেয়ার রিসোর্টের ভিআইপি রুমে পৌঁছে দিয়েছেন। ওই রূমে মালিক বায়োতিস্তাসহ চীনা চেহারার কয়েকজন তার জন্যই অপেক্ষা করছিল।

পালমেয়ার্স বলেন, ‘আমি আমার বসকে অর্থ গ্রহণের কপি প্রদান করি এবং ট্রলিসহ টাকার ব্যাগ রেখে চলে আসি।’

এরপর সিনেট সভাপতি সরাসরি বায়োতিস্তার কাছে জানতে চান যে, তিনি কীভাবে জাংকেট অপারেটর উইকাং জু-কে অর্থ দিয়েছেন?

এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে কী, মি. কিম অং ওই সময় উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি আমাকে বলেন উইকাং জু হচ্ছে তার খেলোয়াড়দের একজন। কিম অং তার পরিচয় দেওয়ার কারণে আমি তাকে (উইকাং জু) পাসপোর্ট এবং তাতে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।’

‘তিনি কি আপনার সম্মুখেই স্বাক্ষর করেছেন’ গুয়েনগোয়ার এমন জিজ্ঞাসার জবাবে বায়োতিস্তা বলেন, ‘হ্যাঁ।’

সূত্র : ইনকয়রার ডটনেট।

Print Friendly, PDF & Email