March 28, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

রথিশচন্দ্র হত্যাকাণ্ড: প্রেমের রোমহর্ষক করুণ কাহিনী

ডেস্ক: দুটি মোবাইল ফোনের অস্বাভাবিক কথোপকথনই ঘুরিয়ে দিয়েছে রংপুরের আইনজীবী রথিশচন্দ্র ভৌমিক হত্যা মামলার মোড়। এরই সূত্রধরে চলা অনুসন্ধানে উত্তপ্ত, ধোঁয়াশাচ্ছন্ন স্পর্শকাতর পরিস্থিতি আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে একটি পরকীয়া প্রেমের রোমহর্ষক করুণ কাহিনী।

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মামলায় সরাসরি সম্পৃক্ত আইনজীবী রথিশচন্দ্র ভৌমিকের পদচারণ ছিলো নানা অঙ্গনে। তাই সবার কাছে আদুরে বাবুসোনা দা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিকসহ নানা কারণে তাঁর হঠাৎ নিরুদ্দেশ হওয়া মেনে নিতে পারেননি কেউ। তাকে ফিরে পেতে রাস্তায় নামা মানুষ, গণমাধ্যম, সরকারের প্রবল চাপ নিয়ে চারটি দিন অন্ধকারেই কাটে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর।

কিন্তু নিখোঁজ আইনজীবীর স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপার আচরণ আর নানা রকম মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে সদ্ধিগ্ধ হয় পুলিশ। তখনই হাতে আসে দুটি মোবাইলফোনের অস্বাভাবিক কথোপকথন।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার সহকর্মী কামরুল মাস্টারের সঙ্গে শত শত বার ফোনে কথোপকথন হয়েছে। সময়ে এবং অসময়ে এই কথা গুলো হয়েছে। তাদের বিভিন্ন কনভারসেশন ছিল। আমরা যখন পেলাম তার প্রতি তখন আমাদের সন্দেহের বড় জায়গা তৈরি হলো।

পুলিশ স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক কামরুল ইসলাম জাফরিকে আটক করে। এই স্কুলের সভাপতি ছিলেন রথিশচন্দ্র ভৌমিক। স্ত্রী স্নিগ্ধাও ছিলেন সহকারী শিক্ষিকা। কামরুলের ফোনে আরেকটি ফোনের কললিস্টে অস্বাভাবিক কথা বলা ওই ফোনটি ছিলো রথিশের সহকারী মিলনের নামে। মিলনকে আটক করে পুলিশ জেনে যায় ওই নম্বরটি দিয়ে রথিশের স্ত্রী কথা বলতেন কামরুলের সঙ্গে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা এর পরেই কামরুলকে হেফাজতে নিলাম। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে বাবু সোনাকে তারা হত্যা করেছে।’

শুক্রবার ভোর থেকে রথিশ নিখোঁজ বলে প্রচার করলেও প্রকৃতপক্ষে আগের রাতেই তাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে কামরুল। কিন্তু তার মরদেহের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্ত করে পুলিশকে। কিন্তু স্নিগ্ধাকে আটক করে মরদেহর সঠিক অবস্থানে পৌঁছে যায় ঘটনার ছায়া তদন্তে থাকা র‍্যাব।

সবার কাছে প্রিয় বাবুসোনাকে চেতনানাশক প্রয়োগের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পথের কাঁটা দূর করতে চেয়েছিলো স্নিগ্ধাও কামরুল। আলমারিতে ভরে কৌশলে কামরুলের বড়ভাইয়ের নির্মাণাধীন ভবনের মাটি খুঁড়ে পুতে রেখেছিলো তারা। কিন্তু সেখানেও চাপা থাকেনি মানুষের প্রিয়মূখ বাবুসোনা দা।

সূত্র: সময়নিউজ

Print Friendly, PDF & Email