March 29, 2024

দৈনিক প্রথম কথা

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক

পাপুলের সংসদ সদস্যপদ বাতিল

বিশেষ প্রতিনিধি:
মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতের রায়ে দণ্ডিত হওয়ায় সংসদ সদস্য পদ হারালেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম।
বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি প্রথম এমপি যিনি বিদেশে আটক ও ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়ার পর পদ হারালেন।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সংসদ সচিবালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘কুয়েতে ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য পদ থাকার যোগ্য নয়। সেই কারণে সংবিধানের ৬৭ (১) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রায় ঘোষণার তারিখ ২৮ জানুয়ারি হতে তার আসন শূন্য হয়েছে।’

জানা যায়, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সিদ্ধান্তে তার সংসদ সদস্য পদ কেড়ে নেয়া হয়েছে। এর আগে বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবালয়ে স্পিকার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় কুয়েত থেকে পাঠানো পাপুলের মামলার রায়ের কপি পর্যালোচনা করা হয়।

আরবি ও ইংরেজিতে লেখা ৬১ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের স্পিকারের দফতরে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সংবিধান, কার্যপ্রণালি বিধি ও আইন অনুযায়ী এখন তার আর সংসদ সদস্য পদ নেই।

অর্থ ও মানবপাচারের মামলায় গত ২৮ জানুয়ারি পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় পাপুলকে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে তিন মাসের মাথায় দণ্ডিত হন তিনি।

সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে- কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি- (ক) কোনো উপযুক্ত আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করে,(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, (গ) তিনি যদি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন, (ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন না।

Print Friendly, PDF & Email