নিজস্ব প্রতিনিধি: সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সম্পাদক রাস বিহারী আদিত্য ১৯৯৯ সালের ২২ জুন মৃত্যু বরন করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলার পাকুটিয়া গ্রামে রক্ষণশীল পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মুকুন্দ মোহন আদিত্য। মা মহামায়া আদিত্য। তিনি চার ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন প্রথম। তাঁর ছোট ভাই প্যারীমোহন আদিত্য ১৯৭১ সনে পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম ভাবে হত্যা করে। রাস বিহারী আদিত্য ও প্যারী মোহন আাদিত্য হৃদয়ের উপলব্ধি থেকে খুঁজে পেয়েছিলেন ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রকে।
পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঅনুকুল চন্দ্রের লীলাতত্ত্ব পরম বিস্ময়ের। যার ছোঁয়ায় হৃদয় ও অন্তরকে কলুষমুক্ত করে স্বর্গীয় রাববিহারী আদিত্য একজন অসাধারণ মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৫০ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের আর্শীর্বাদে পাকুটিয়ায় নিজ বাড়ীতে প্রতিষ্ঠা হয় সৎসঙ্গ আশ্রম। শুরু হয় দ্ইু ভাইয়ের সৎসঙ্গকে নিযে নতুন জীবন। ১৯৫০ সালের বহু বছর আগে থেকেই রাস বিহারি আদিত্য পাবনা ঠাকুর বাড়ীতে যাতায়াত করতেন। ১৯৪৬ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর স্বাস্থ্যগত কারনে ভারতের দেওঘর চলে গেলে দ্ইু ভাই একসাথে ভারতের দেওঘর শ্রীশ্রীঠাকুর দর্শনে যান। ঠাকুরের প্রিয় মানূষ এবং প্রিয় ভক্ত হয়ে উঠেন আদিত্য পরিবার।
১৯৬৪ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর পাবনা থেকে ভারতের দেওঘর চলে গেলে শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান উদ্ধারের পদক্ষেপ নেন। ঐ দুর্যোরে সময় পবনা হিমাইতপুর যাতায়াত সহ সরকার ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।
১৯৫৭ সালে দুই পাতার লিফলেটের মাধ্যমে সৎসঙ্গ সংবাদ প্রকাশ করেন। পরে মন্দির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী (আষাঢ়) সংখ্যা রাস বিহারী আদিত্যের সম্পাদনায় প্যারী মোহন আদিত্য এবং কুঞ্জ বিহারী মজুমদারের (কাব্যতীর্থ) যুগ্ম সম্পাদনায় সৎসঙ্গ সংবাদ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১৯৫৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের পাদুকা এনে আরো ব্যাপক ভাবে আশ্রমের কাজ শুরু করেন। তাই সৎসঙ্গ পাকুটিয়াকে বলা হত, তৎকালীন পূর্বপাকিস্থানের পূণ্য পাদুকাপীঠ স্থান।
১৯৬৩ সালে সৎসঙ্গ সংবাদের কিছু লেখার ভুল ব্যাখ্যা করে দুষ্কৃতিকারিরা আশ্রমে আগুন দিয়ে ধ্বংশ করে দেয় পান্ডলিপি এবং আশ্রমের ঘর বাড়ী সহ আসবাবপত্র। ১৯৬৫ ও ১৯৬৬ তে দুষ্কৃতিকারিরা মিথ্যা মামলায় রাস বিহারী ও প্যারী মোহন আদিত্যকে পুলিশ দ্বারা হয়রানী করা হয়। ১৯৬৮ সালের শেষ দিকে তৎকালীন পুর্ব পাকিস্থানের জাতীয় সংসদের স্পীকার আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শাহজান, ভবেশ বোষ, বাসেদ সিদ্দিকী এবং র্মিজা আমজাদ হোসেন সহ আরো বিশিষ্ট ব্যাক্তি গণের পরার্মশে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাতের জন্য যোগাযোগ করা হতে থাকে। এই প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে ২৪ শে মার্চ ঢাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং আশ্রম পরির্দশনের জন্য আমন্ত্রন সহ শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান সৎসঙ্গের কাছে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।
জানা যায়, স্বগীয় রাস বিহারী আদিত্য শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যকে দিয়ে ১৯৫২ সালে স্থানীয় ছেলে মেয়ে নিয়ে সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়ে পড়াতে বলেন। পরের বছর ১৯৫৩ তে ২১ ফেব্রুয়ারী প্রভাত ফেরি করেন বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে।
১৯৯৯ সালের ২২ জুন রাস বিহারী আদিত্য ইহধাম ছেড়ে পরধামে চলে গেলেন। তাঁেক বিদায় সেদিন আকাশ ভারি হযে উঠেছিল। উল্লেখ্য তার ১৯৭১ এর ভয়াল ৮ আগষ্ট কামানের গোলাগোলির শব্দে পাকুটিয়ার আকাশ শিউরে উঠেছিল। সেই দিনের আতচিৎকারে ক্লান্ত হয়ে এক সময় হৃদয়স্পন্দন থেমে গিয়েছিল আশ্রমের এবং এই গ্রামের। সেদিন পাকিস্তানী বাহিনী প্যারী মোহন আদিত্যকে হত্যা করে।
অসুস্থতাকালীন, সাময়িকভবে রাস বিহারী আদিত্য একাত্তরের শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যের সন্তান নটো কিশোর আদিত্যকে কেন্দ্রিয় সৎসঙ্গ আশ্রমটির পূর্ণ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করেন। ১৯৯৯ সালে আকস্মাৎ রাসবিহারী আদিত্যের শরীরিক অসুস্থতার কারনে মৃত্যু বরন করেন। প্রধান আচার্যদেব পুজনীয় শ্রীশ্রীবড়দাদার নির্দেশে নতুন সম্পাদক নিযুক্ত হওয়া না পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত হিসাবে নটো কিশোর আদিত্য দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সম্পাদক ধৃতব্রত আদিত্য। সুব্রত আদিত্য সহ-সম্পাদক নিযুক্ত হয়ে বর্তমানে সৎসঙ্গের আর্দশকে ব্যাপক ভবে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
এ বিভাগের আরো..
হাইকোর্টের আদেশ আপিলে স্থগিত, রমজানে স্কুল খোলা
সৎসঙ্গ বিহারে ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের জন্ম মহোৎসব
মাদারীপুর আদালত চত্বরে উদ্বোধন হয়েছে নতুন মসজিদ