ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: পদ-পদবী ছাড়াও সমাজে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা যায় সেজন্য দল বা রাজনৈতিক পরিচয় লাগেনা। কথায় আছে মানব সেবাই পরম ধর্ম। সেই ধর্মই পালন করে সমাজে কেউ কেউ মানুষের হৃদয় নিঙ্গরানো ভালোবাসা পেয়ে এগিয়ে যায়। মানব সেবার চেতনাকে হৃদয়ে লালন করেই মানবতার কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়ে মহৎ হৃদয়ের মানুষগুলি।
ঠিক তেমনই একজন সহজ সরল সংগ্রামী গরীব দুখি মেহনতি মানুষের হৃদয়ের মধ্যমনি মো: রুহুল আমিন আকন্দ (হেপলু)। তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ৮নং দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি একজন ক্লিন ইমেজের মিষ্টভাষী,পরোপকারী, সাধারণ জনগণের আস্থার প্রতীক, তারুণ্যের অহংকার, সুযোগ্য নেতৃত্বের অধিকারী। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১০ অক্টোবর ১৯৮৮ সালে দেওপাড়া ইউনিয়নের কাপাসিয়া গ্রামের মুসলিম পরিবারে জন্ম তার। তার পিতার নাম মো: জহির উদ্দিন এবং মাতার নাম রহিমা বেগম।
স্থানীয় হরিণাচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পড়ালেখার হাতে খড়ি। তারপর ভাবনদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণি এবং ভাবন দত্ত গণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি পাস করেন। তারপর তিনি পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলায় অবস্থিত শাজাহান সিরাজ কলেজে ভর্তি হন।
সাংসারিক অভাব অনটনের কারণে নিয়মিত কলেজে ক্লাস করা, বই কলম কেনা এসবের কোনটাই সামর্থ্য ছিল না তার। অর্থ সংকটে কলেজের গন্ডি পেরোতে পারেনি বর্তমান শিক্ষা বান্ধব এই জনদরদি চেয়ারম্যান। তারপরও অস্বচ্ছলতার কারনে পড়াশুনা না করতে পারার কোন আক্ষেপ নেই তার মধ্যে শুধু রয়েছে এক চাপা কষ্ট। তার বয়সের সবাই যখন কলেজে লেখাপড়া করছে ঠিক তখনই তিনি পরিবারের সুখের হাল ধরতে পিতা মাতা ভাই বোন সবাইকে ছেড়ে পাড়ি জমান সূদুর মালদ্বীপে।
মালদ্বীপে মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনে কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে চাকুরী নেন পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য। প্রবাসে চার বছর চাকরি করার পর ২০১০ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে এলাকার জনগণের সাহায্যার্থে বাড়িয়ে দেন হাত। উপার্জিত অর্থ ব্যায় করেন এলাকাবাসীর কল্যাণে। আস্তে আস্তে একালাবাসীর মধ্যমনিতে রুপান্তর হন তিনি। এলাকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে এক বছরেই তার সঞ্চিত সকল টাকা শেষ হয়ে গেলে পুনরায় মালদ্বীপে ফিরে যান এবং ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন। সেখানে গিয়েও তিনি চিন্তা করেন তার এলাকাবাসীর কথা, কিভাবে তাদের উন্নয়ন কল্যানে বিপুল অর্থ সম্পদ অর্জন করে ব্যয় করা যায়। তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয় মালদ্বীপের স্থানীয় এক বাসিন্দা নাসির আহমেদের সঙ্গে। দুজন মিলে গড়ে তোলেন মালাক ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এটি ছিল রড সিমেন্টের ব্যবসা। পিতা মাতা আর এলাকাবাসীর দোয়া ভালোবাসায় রাতারাতি ঘুরে যায় তার ভাগ্যের চাকা। পাঁচ বছরে কয়েক কোটি টাকা আয় করেন তিনি। মালদ্বীপ অবস্থানকালেও তিনি ভেবেছেন তার এলাকাবাসীর কথা, তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা। আর সেজন্যই সুদুর প্রবাস থেকেও তার এলাকার মানুষের কল্যাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। নিজেকে বিলিয়ে দেন মানব কল্যাণে। বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে ধর্মভীরু এই বর্তমান চেয়ারম্যান হেপলু গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নিজ গ্রামে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করেন। এমন একটি মসজিদ পেয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীগণ চেয়ারম্যান মো: রুহুল আমিন এর সুস্থতা মঙ্গলের জন্য দোয়া করেন। কিভাবে জনকল্যাণে কাজ করা যায় এই বাসনা নিয়ে তিনি ২০২১ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন।
তিনি আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জনভোটে ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই গত এক বছরে এলাকার কাঁচা রাস্তা, পাকা রাস্তা, কাঠের ব্রিজ, কালভার্ট ড্রেন সংস্কারসহ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করেছেন। রাস্তায় চলাচলের স্বাধীনতা, বিচার ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান, সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে নিজের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। ইউনিয়নের আলোকিত মুখ হিসেবে পরিচিত, নিজের সাফল্যের কারণে বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক নানা ভাবে প্রশংসিতও হয়েছেন। অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের দাতা। ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত নম্র, ভদ্র, সদাহাস্যোজ্জ্বল ও সাদা মনের মানুষ। তাঁর মাঝে কোন অহংকার নেই। ছোট বড় সকলের বন্ধু, দলমত নির্বিশেষে আজ সকলের কাছে প্রিয়।
এলাকাবাসী জানান, তিনি একজন উদার মনের মানুষ তিনি করোনা কালীন সময়ে আমাদের মাঝে চাল-ডাল ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক দ্রব্য বিতরণ করেছেন। এছাড়াও তিনি নিজে শ্রমিক হয়ে দরিদ্র কৃষকদের সাথে মাঠের ফসল কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন। দরিদ্র মানুষের উপার্জনের কোনো উপায় না থাকায় তিনি কয়েকজনকে ভ্যান গাড়ি কিনে দিয়েছেন। এক সময়ে ভিটেবাড়ি ছাড়া হেপলুর জমি বলতে কিছুই ছিল না। বিদেশে অবস্থানকালে তিনি কয়েক বিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেন। তার উপার্জনের একাংশ বিলিয়ে দেন ইউনিয়ন বাসীর মাঝে।
মো: রুহুল আমিন আকন্দ হেপলু জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েই এডিপি, এলজিএসপি, উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, এমপি কোটায় বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের বাউন্ডারি নির্মাণ, টয়লেট সংস্কার, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে আরো ৪ কোটি টাকার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব কাজে তার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান। মো: রুহুল আমিন আকন্দ হেপলু একজন ত্যাগী ও জনগনের আস্থার প্রতীক। সবাইকে নিয়ে ইউনিয়নকে একটি রোল মডেলে পরিনত করার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তার রয়েছে আরো একটি বিশেষ গুন। তিনি মানুষের বিপদের কথা শুনলে কখনো ঘরে বসে থাকেন না। অসহায় দুস্থ মানুষের সুখে দুঃখে সব সময়েই তাদের পাশে থাকেন। এ কারনে তিনি সকলের কাছে প্রিয়।
অনেক গুনে গুনান্বিত এ চেয়ারম্যান বর্তমানে সমাজসেবা, জনসেবা ও সামাজিক সংগঠন সহ প্রতিটি কাজই প্রশংসনীয়। সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ইতিমধ্যেই তিনি সোশ্যাল কালচারাল একটিভিটিস ফোরাম কর্তৃক এওয়ার্ড পেয়েছেন। পারিবারিক জীবনে তার স্ত্রী, এক ছেলে মাশরাফি আকন্দ নিরব এবং কন্যা উশা তাসফিয়া কে নিয়েই সুখের সংসার।
১০ ফেব্রুয়ারি জনদরদি জনবান্ধব জননন্দিত এই চেয়ারম্যান মো: রুহুল আমিন আকন্দ হেপলুর দায়িত্ব গহণের ১ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ভবন দত্ত গণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
এ বিভাগের আরো..
ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস :ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বজায় থাকুক জনসচেতনতা
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস : ক্যান্সার প্রতিরোধে চাই সচেতনতা
বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস:কুষ্ঠ রোগীর অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলে একত্রে কাজ করি